আসুন নকল ডিম চিনে নেই :
ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষ–জাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনে ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করা হয়; যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে। তবে ডিম সম্পর্কে ইদানীং মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে; যা সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা জরুরি।
নকল ডিম বলতে এখানে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ডিমকে বোঝানো হয়েছে; যা সাধারণ মানুষ প্লাস্টিক ডিম বলে জানে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রায়ই নকল বা কৃত্রিম ডিমের বিষয়ে খবর ছাপা হচ্ছে। বাংলাদেশের বাজারে এই কৃত্রিম ডিমের অস্তিত্ব রয়েছে বলে অনেকেই প্রচারও করছেন। অনেক বিক্রেতা ডিম কিনে রাখার সময় ডিমের কুসুম বা সাদা অংশের বর্ণ দেখে আসল কিংবা নকল ডিম চেনার অপচেষ্টা করেন।
তবে বাস্তব সত্য এটিই যে, বাংলাদেশে কোনো নকল ডিমের অস্তিত্ব নেই। তাহলে প্রশ্ন আসে কেন এই সন্দেহ বা উদ্বিগ্ন? বিষয়টি খুব সহজেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে ডিমের তিনটি অংশ—ডিমের খোসা, ভেতরের সাদা অংশ এবং হলুদ অংশ বা কুসুম। নানা কারণেই ডিমের ভেতরের সাদা অংশ বা কুসুমের দৃশ্যমান পরিবর্তন হতে পারে। যেমন ডিম যদি ১৫ দিন বা তার বেশি সময় রেখে দেওয়া হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সাদা অংশের দৃঢ়তা কমে হালকা পানির মতো তরল হতে পারে। অনেক সময় ডিপ ফ্রিজে ডিম রাখা হলে অথবা ফ্রিজের নরমাল অংশের তাপমাত্রা কোনো কারণে কমে শূন্য ডিগ্রির নিচে গেলে, ডিমের খোসা ফেটে ভেতরের সাদা অংশ আংশিক বাইরে চলে আসতে পারে। এরূপ অবস্থায় অনেকেই এটিকে নকল ডিম মনে করতে পারেন। কেন এমনটি ঘটে? ডিমের সাদা অংশ বা অ্যালবুমেনে ৮৮-৯০ শতাংশ থাকে পানি। ডিম যখন ডিপ ফ্রিজে রাখা হয় অ্যালবুমেন জমাট বেঁধে বরফের মতো কঠিন আকার ধারণ করে। আমরা জানি, কোনো তরল পদার্থ জমাট বাঁধলে তার আয়তন বেড়ে যায়। তাই অ্যালবুমেন জমে আয়তন বেড়ে যাওয়ায় ডিমের খোসা ফেটে ভেতরের অংশ আংশিকভাবে বাইরে চলে আসে, যা দেখে অনেক সময় ভোক্তা নকল ডিম বা কৃত্রিম ডিম মনে করতে পারেন।
Comments
Post a Comment