ফ্রিল্যান্সার

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করার আগে কী করবেন, কী করবেন না

আমাদের মনে  অনলাইন কাজ নিয়ে  অনেক প্রশ্ন,আজ আমি চেষ্টা  করবো আপনাদের কিছু প্রশ্নের  উত্তর দিতে তথ্যপ্রযুক্তির আউটসোর্সিংয়ে এখন যুক্ত উল্লেখযোগ্য অনেক মুক্ত পেশাজীবী। সফলতা পেতে ফ্রিল্যান্সারদের কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়, তা জেনে নেওয়া যাক।

অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় কয়েকটি ওয়েবসাইট। সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। কাজদাতা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যোগাযোগ করে ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দেয়।

কয়েকটি ওয়েবাসাইটে কাজের দক্ষতার বিবরণ জানাতে হয়, যাতে ক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এসব সাইটের মধ্যে ফাইভার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকম, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ও ওয়ার্কএনহায়ার ডটকমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়। ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায় এসব সাইট থেকে। মনে রাখতে হবে, কাজ শেষ করার পর কাজদাতার অনুমোদন পেলেই তবেই অর্থ ছাড় দেবেন তিনি। এ ক্ষেত্রে কাজের মানের ওপর কাজদাতা রেটিং দিতে পারেন। গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে। বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ আনা যায়।অনলাইন বাজারে (মার্কেটপ্লেস) প্রতিদিন নতুন কাজ আসছে। সেগুলোতে আবেদন করে কাজ পাওয়া যায়। পাশাপাশি আপনার নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে, পরিচিতি বাড়াতে হবে। একজন গ্রাহককে ভালো কাজ ও ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে সন্তুষ্ট করতে পারলে তিনি তাঁর পরিচিতদের কাছে আপনার কাজের প্রশংসা করবেন, যা ভবিষ্যতে আরও কাজ পেতে সাহায্য করবে। গ্রাহক বা ক্লায়েন্টদের মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, তাঁদের কাছে নতুন কোনো কাজ আছে কি না কিংবা তিনি এমন কাউকে চেনেন কিনা যাঁর কাছে আপনার জন্য কাজ থাকতে পারে।


‘আলাদাভাবে শেখার প্রয়োজন নেই, কাজ করতে করতে শেখা হবে’—ধারণাটি এ ক্ষেত্রে ভুল। কাজ শুরু করার আগে বিষয়টি সম্পর্কে সর্বোচ্চ দক্ষতা না থাকলেও অবশ্যই কাজটি সম্পন্ন করার মতো জ্ঞান থাকতে হবে। কাজের মাধ্যমে শেখা শুরু করলে প্রায় কখনোই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রকল্প শেষ করা যায় না। নিজের আগ্রহ কোন দিকে রয়েছে, সেটা বুঝতে হবে প্রথমে এবং এরপর সেই বিষয়সংশ্লিষ্ট কাজগুলো খুঁজে বের করতে হবে মার্কেট থেকে। কাজের বর্ণনায় লেখা থেকেও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কী কী বিষয় শেখা প্রয়োজন সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

কাজ শেখার সব থেকে বড় উৎস হলো ইন্টারনেট। সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে খুঁজে নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব এবং এখান থেকেই শেখা শুরু করা যেতে পারে। অনলাইনে বিনা মূল্যে প্রায় সব বিষয় সম্পর্কেই জানা সম্ভব। নিয়মিত চর্চা করা হলে ধীরে ধীরে বিষয়টি সম্পর্কে দক্ষ হয়ে ওঠা সম্ভব। পাশাপাশি শেখার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যেতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে বা কোনো কোর্স করার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ পাওয়া শুরু হয়ে যাবে এমন নয়। নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। আবার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেও, পাশাপাশি নিজের আলাদাভাবে শেখার কাজটি চালিয়ে যেতে হয়।

আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার ফলেই পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। কোনো বিষয়ে পারদর্শিতা না থাকলে কাজ পাওয়া বা উপার্জনের আশা করাটা ভুল। কত কম সময়ের মধ্যে কত বেশি পরিমাণ উপার্জন সম্ভব, এমন লক্ষ্যের পেছনে দৌড়ালে জয়লাভ করা যাবে না। দক্ষতা বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে কাজ পাওয়ার জন্য অনুসন্ধান করতে হবে।দক্ষ হয়ে উঠলে সাধারণত কাজের অভাব হয় না। তাই বলে কি আপনি সব কাজ একসঙ্গে করতে পারবেন? ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত কাজের সুযোগ পেলে না বলতে চান না। কিন্তু এমন কাজে হাত দিলেন, যা ঠিক সময়ে ঠিকভাবে শেষ করতে পারবেন না, এতে আপনার সুনাম নষ্ট হবে। তবে কোন কাজটি করবেন কোনটি ছেড়ে দেবেন, তা ভেবেচিন্তে ঠিক করতে হবে। অর্থের পরিমাণ অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু শুধু তা দেখেই কোনো কাজ শুরু করে দেওয়া উচিত নয়। ভেবে দেখতে হবে কাজটি করতে কত সময় লাগতে পারে, সে সময় আমার হাতে আছে কি না, যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে তা সেই সময়ের জন্য উপযুক্ত কিনা, অন্য কোনো শর্ত জুড়ে দিয়েছে কি না, ইত্যাদি। যদি কোনো কাজই উপযুক্ত মনে না হয়? কী করবেন? ভালো একটা বই নিয়ে পড়তে শুরু করুন, আনন্দও পাবেন, জ্ঞানও বাড়বে! কাজের জন্য ঘন ঘন আবেদন করুন ‘ঘরে বসে আয়’ কথাটা শুনে অনেকে ভেবে বসবেন না আয় বোধ হয় দরজায় এসে কড়া নাড়বে! নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতা থাকতে হবে, নেটওয়ার্কিং বাড়াতে হবে, পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে, সবই ঠিক আছে। এর পরও আপনাকে কাজের জন্য আবেদন করে যেতে হবে।  বর্তমানে ফ্রিল্যান্স কাজের অনেক ওয়েবসাইট আছে, সেগুলোতে পর্যাপ্ত কাজও আছে। দরকার শুধু খুঁজে বের করা। এখানে কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন। যেমন, আরএসএস ফিড তৈরি করতে পারেন, যেখানে আপনার জন্য উপযুক্ত কাজগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে জমা হতে থাকবে। গুগল অ্যালার্ট (www.google.com/alerts) এ ক্ষেত্রে ভালো ফল দিতে পারে।কাজে অবশ্যই পেশাদারির পরিচয় থাকতে হবে। কিন্তু নিজের ব্যক্তিসত্তা ভুলে গেলে চলবে না। সব সময় ক্লায়েন্টের হ্যাঁ–র সঙ্গে হ্যাঁ না মিলিয়ে নিজের বক্তব্য সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে। কারণ, গ্রাহক নিজে কাজটি পারেন না বলেই একজন বিশেষজ্ঞকে ওই কাজে নিয়োগ দিতে চান। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে। নিজের ওপর অসন্তুষ্ট হবেন না।

আজ এ পর্যন্ত ভালো থাকবেন বন্দুরা  

Comments

Popular posts from this blog

What is Git?

what Start Bootstrap? 10 Best Reasons to Use Bootstrap for Amazing Web Designs?

First-Time Git Setup: